নড়াইলে ননী ফল চাষে সাফল্যের গল্প: উদ্যোক্তা রবিউলের কাহিনী

নড়াইলে ননী ফল চাষে সাফল্যের গল্প: উদ্যোক্তা রবিউলের কাহিনী

নড়াইল, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪ (বাসস): নড়াইল জেলার কৃষি খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। উদ্যোক্তা রবিউল ইসলাম (৪৩) বাণিজ্যিকভাবে ননী ফল চাষ করে দারুণ সাড়া ফেলেছেন। ননী ফলের বৈজ্ঞানিক নাম মরিন্ডা সিট্রিফোলিয়া, যা প্রথমবারের মতো নড়াইলে চাষ হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, এই ওষুধি গুণসম্পন্ন ফলের চাষ কৃষিতে একটি নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে।

রবিউল ইসলামের ননী ফল চাষের যাত্রা

নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের ধাড়ীয়াঘাটা গ্রামের শামসুর রহমানের ছেলে রবিউল ইসলাম, যিনি এসিআই যশোর কৃষি প্রজেক্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন, ২০২১ সালে ১৫ শতক জমিতে ননী ফলের বাগান গড়ে তোলেন। ভারতে চাকুরির সুবাদে ননী ফলের একটি বিশাল প্রজেক্ট দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হন এবং জানতে পারেন এটি ক্যান্সারের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এরপর তিনি ভারত থেকে চারা এনে নিজের বাগান গড়ে তোলেন।


ননী ফলের বৈশিষ্ট্য ও বাজারমূল্য

বর্তমানে রবিউলের বাগানে আফ্রিকান, ইন্ডিয়ান ও মালয়েশিয়ান জাতের প্রায় দুইশ ননী গাছ রয়েছে। ২০২২ সালের শুরু থেকে তিনি গাছ থেকে ফল পাওয়া শুরু করেন। গাছ লাগানোর এক বছরের মধ্যেই ফল আসে। প্রতিকেজি ননী ফল তিনি ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকায় বিক্রি করেন। এছাড়া প্রতিটি চারা সাইজ ভেদে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন। ফল ও গাছ বিক্রিতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পর রবিউল আরও ২৫ শতক জমিতে ননী ফলসহ করোসাল ও ইনসুলিন উদ্ভিদ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।


উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ

রবিউল বলেন, "বাগান শুরুর পর পরিচর্যায় তেমন খরচ নেই, অল্প কিছু সার ও ওষুধের প্রয়োজন হয়। গাছের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফলন বাড়তে থাকে। যে কেউ ননী ফলের চাষসহ ওষুধি গুণসম্পন্ন ভেষজ উদ্ভিদ চাষে এগিয়ে আসলে আমি তাকে সহযোগিতা করবো। ভেষজ উদ্ভিদ চাষ করে ব্যবসায় সাফল্যের সাথে মানুষের উপকারও হয়।"


কৃষি বিভাগের সহযোগিতা

মাইজপাড়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শোভন সরদার জানান, রবিউলের বাগানে লাভজনক ননী ফলসহ ওষুধি গুণসম্পন্ন বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ উৎপাদনে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান বলেন, "ক্যান্সার প্রতিষেধকসহ শরীরে ইমিউনিটি বাড়ানোর কাজে ননী ফল ব্যাপক ভূমিকা রাখে। বাণিজ্যিকভাবে নড়াইলে এ প্রথম রবিউলের বাগানে ননী ফলের চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা তাকে সহযোগিতা করছেন। রবিউলের পাশাপাশি কেউ ভেষজ উদ্ভিদ চাষে এগিয়ে আসলে তাকে সহযোগিতা করা হবে।"


সমাপনী মন্তব্য

ননী ফলের চাষ নড়াইলে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। উদ্যোক্তা রবিউল ইসলামের এই প্রচেষ্টা অন্যান্য কৃষকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। তাঁর এই উদ্যোগ শুধু ব্যবসায়িক সাফল্যই নয়, বরং মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনার মুল্যবান বক্তব্য লিখুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪